
গিড ডিজিজ (Gid Disease)
কারণ:
Multicep Multiceps tape worm দ্বারা এ রোগ হয় ।
● এ রোগে আক্রান্ত ছাগলের মাথা ঘুরায় ।
● ছাগল সব সময় চিৎকার করে ।
● খাওয়ায় রুচি থাকে না ।
● দিন দিন ছাগল শুকিয়ে যায় ।
রোগ নির্ণয়:
বৈশিষ্ট্যপূর্ণ উপসর্গ ও দুই শিঙের পিছনে হাতের আঙ্গুল দ্বরা চাপ দিলে ছাগল ব্যথা অনুভব করলে বুঝতে হবে ছাগল গিড রোগ ( Gid Disease ) এ আক্রান্ত হয়েছে ।
চিকিৎসা:
● সাধারণত শিং এর পশ্চাৎ মধ্যকভাগে ( Posterior medial aspects ) আক্রান্ত স্থান পাওয়া যায় যা পালপেশনে নরম বোধ হয় ।
● পশুকে ভাল করে নিয়ন্ত্রণ করে উক্ত এলাকা ভালভাবে ব্লেড দিয়ে চেঁছে সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করে তুলা দিয়ে টিংচার আয়োডিন লাগিয়ে নিতে হবে ।
● অস্ত্রোপচারের স্থানের ত্বকের নিচে ৪-৫ মি. লি. স্থানিক অ্যানেস্থেটিক যেমন- ইঞ্জেকশন জাইলোকেইন বা লিগনোকেইন হাইড্রোক্লোরাইড ২% সলুশন ( Jasocaine®, Jayson ) প্রয়োগ করতে হবে ।
● অস্ত্রোপচারের স্থান আড়াআড়ি ভাবে ( cross-wise ) ছেদন করে মোট চারটি পেটি বা ফ্ল্যাপ ত্বক নিম্নস্থ টিস্যু ছুটিয়ে আর্ট্যারি ফরসেপের সাহায্যে উল্টিয়ে রাখতে হবে ।
● রক্তক্ষরণ সোয়াব ও আর্ট্যারি ফরসেপের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।
● মস্তিষ্কের নরম অস্থির উপরের টিস্যু পরিষ্কার করে র্যাট টুথ ফরসেপস দিয়ে নরম অস্থি (periosteum) ছেদন ও ভেঙ্গে ( প্রয়োজনে টিফাইনের সাহায্যে অস্থি ছিদ্র করতে হয় ) মস্তিষ্কের নরম অস্থি খুলে ফেলতে হবে ।
● মস্তিষ্কের ঝিল্লির উপর স্থানিক অ্যানস্থেটিক ছিটিয়ে দিতে হয় । পরে এই ঝিল্লি ছেদন করে মস্তিষ্কের কলা বা টিস্যু অনাবৃত করতে হবে ।
● উপরিগত ( superficial ) সিস্ট সহজেই ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে আসে কিন্তু সিস্ট গভীরে থাকলে প্রোবের ( probe ) সাহায্যে সিস্টের স্থান চিহ্নিত করে চক্রাকারে প্রোবকে ঘুরিয়ে মস্তিষ্কের
টিস্যু থেকে সিস্টকে বের করতে হয় ।
● সিস্ট বের করার পর মস্তিষ্কের অতিরিক্ত ফ্লুইড ফেলে দিয়ে সোয়াব দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হয় । পরে সালফোনিলামাইড অথবা ক্রিস্টালাইন পেনিসিলিন বা স্পেটোপেন ক্ষত
দিয়ে ছেদনকৃত মস্তিষ্কাবরণ ঝিল্লি মুখোমুখি এনে মস্তিষ্ক কলাকে আবৃত করতে হবে ।
● ত্বকের ৪টি পেটি যথাস্থানে এনে নাইলনের সুতা দিয়ে সেলাই ( interrupted ) করে নিতে হবে।ক্ষতের সেলাইয়ের উপর টিংচার বেনজিন সিল দিতে হবে ।
● দুর্বল পশুর ক্ষেত্রে অন্ত্রোপচারের সময় ডেক্সট্রোজ-স্যালাইন শিরায় ইঞ্জেকশন দেয়া ভালো ।
● অস্ত্রোপচারের দিন থেকে শুরু করে প্রত্যেহ যে কোন একটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ যেমন- প্রোনাপেন ভেট বা রেনামাইসিন পর পর প্রতিদিন মোট ৭ দিন মাংসপেশীতে দিতে হবে ।
ক্ষত শুকিয়ে গেলে অস্ত্রোপচারের ৮-১০ দিন পর সেলাই কেটে দিতে হবে ।
● গিড ডিজিজ অস্ত্রোপচার সতর্কতার সাথে করতে হয় কারণ অনেক সময় অস্ত্রোপচারের সময় বেশি রক্তক্ষরণ হয়ে অথবা অস্ত্রোপচারোত্তর জটিলতায় ছাগল মারা যায় ।
প্রতিরোধ:
নিয়মিত কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ালে এ রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ।