রাণীক্ষেত রোগ

রোগের লক্ষণ (Clinical Signs)


এ রোগে প্রধানত শ্বাসতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। এতে তিন প্রকৃতির লক্ষণ প্রকাশ পায়। যথা রাণীক্ষেত রোগ পাখিতে তিন প্রকৃতিতে দেখা যায়। যথা ভেলোজেনিক, মেসোজেনিক ও লেন্টোজেনিক।

ক. ভেলোজেনিক প্রকৃতি (Velogenic Form) : এ প্রকৃতির রাণীক্ষেত রোগ সবচেয়ে মারাত্মক। এতে অনেক সময় অত্যন্ত দ্রুত জীবাণু সংক্রমণের ফলে লক্ষণ প্রকাশের পূর্বেই মুরগি মারা যেতে পারে। তবে তা না হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। যেমন: প্রথমদিকে আক্রান্ত পাখি দলছাড়া হয়ে ঝিমাতে থাকে। মাথায় কাপুনি হয়, ঘন ঘন শ্বাস গ্রহণ করে। সাদাটে সবুজ পাতলা পায়খানা করে ও দুর্বল হয়ে পড়ে। মুখ হা করে রাখে, কাশতে থাকে এবং নাকমুখ দিয়ে শ্লেহা ঝরে। শরীর শুকিয়ে যায়। মাথার ঝুঁটি ও গলার ফুল কালচে হয় এবং চোখমুখ ফুলে যায়। ডিমপাড়া মুরগির ডিম উৎপাদন কমে যায়, ডিমের খোসা পাতলা ও খসখসে হয়। তাছাড়া অপুষ্ট ডিম উৎপন্ন হয়।

খ. মেসোজেনিক প্রকৃতি (Mesogenic Form): এ প্রকৃতিতে আক্রান্ত মুরগিতে রোগলক্ষণ ততটা তীব্র নয়। তবে, নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা যায়। যথা: ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। ডিম উৎপাদন কমে যায়। পাখির কাশি হয় ও মুখ হা করে নিঃশ্বাস নেয়। হলদে সবুজ রঙের পাতলা পায়খানা করে। জীবাণু আক্রমণের দু’সপ্তাহ পর স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়। ফলে মাথা ঘোরায় ও পা অবশ হয়ে যায়। মাথা একপাশে বেঁকে যেতে পারে, কখনো বা মাথা দুপায়ের মাঝখানে চলে আসে অথবা সোজা ঘাড় বরাবর পিছন দিকে বেঁকে যেতে পারে।

গ. লেন্টোজেনিক প্রকৃতি (Lentogenic Form): এতে মৃদু প্রকৃতির লক্ষণ প্রকাশ পায়। যথা: শ্বাসতন্ত্র কম আক্রান্ত হওয়ায় এ তন্ত্রের লক্ষণ কম প্রকাশ পায়। সামান্য কাশি থাকে। কিছুটা ক্ষুধামন্দা ভাব থাকে। ডিমপাড়া মুরগির ডিম উৎপাদন আস্তে আস্তে কমতে থাকে।

রোগ নির্ণয় (Diagnosis) নিম্নলিখিতভাবে রাণীক্ষেত রোগ নির্ণয় করা যায়। যথা: রোগের ইতিহাস, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ, ভাইরাস পৃথকীকরণ, ময়না তদন্তে বিভিন্ন অঙ্গের পরিবর্তন ইত্যাদির মাধ্যমে রাণীক্ষেত রোগ নির্ণয় করা যায়। রোগের ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ থেকে। ভাইরাস পৃথকীকরণ ও শণাক্তকরণের মাধ্যমে। শ্বাসনালির নিঃস্রাব, পাখির রক্ত, অস্থিমজ্জা, মস্তিষ্ক, প−ীহা, ফুসফুস প্রভৃতি গবেষণাগারে পরীক্ষা করে। মৃত মুরগির ময়না তদন্তের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গের রোগতাত্তি¡ক বা প্যাথলজিক্যাল (Pathological Changes) পরিবর্তন দেখে। এতে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো দেখা যায়।

♦ শ্বাসনালিতে রক্তাধিক্য ও রক্ত সঞ্চায়ন।
♦ স্বরযন্ত্র ও শ্বাসনালিতে রক্তাম্বু বা শৈ−ষ্মিক নিঃস্রাব।
♦ প−ীহা বড় হয়ে যায়।
♦ খাদ্য অন্ত্রে, বিশেষ করে প্রোভেন্ট্রিকুলাস ও গিজার্ডে, রক্তক্ষরিত পচা ক্ষত (Haemorrhagic Necrotic Foci)।
♦ অন্ত্রের শেষভাগে পাতলা সাদাটে মল।


চিকিৎসা

Rx

1. Syp. Ciprocin 100ml or Cipro-A-vet
2. Pow. Esb3 30% vet or Cocciof vet or Amprol vet